ভালো সেলফি

নিজের ছবি নিজে বা পোর্ট্রেট তোলার নাম সেলফি হলেও এখন দল বেঁধে অংশ নিচ্ছেন সেলফিতে।
সবাই যে সেলফি-ভক্ত, তা কিন্তু না। তবে কোমর বেঁধে প্রতিবাদ করলেও যে সেলফি তোলা বন্ধ হবে না, তা এখন সবাই জানেন। আর তাই সেলফি-সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে আদবকেতা মেনে চললে বরং সেলফি হয়ে উঠতে পারে আনন্দের উপলক্ষ।
কোনো কিছুই বেশি বেশি ভালো না
সেলফি থাকুক বিশেষ উপলক্ষের জন্য। হয়তো নতুন চুলের ছাঁট, বিশেষ কোনো অর্জন, বিশেষ কোনো মুহূর্ত—সর্বোপরি সেটা হতে হবে এমন কিছু, যা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করা যায়, উদ্‌যাপন করতে হয়। সেলফি পোস্ট করার সঙ্গে যদি সেই মুহূর্তটা নিয়ে দুটো লাইন যোগ করে দেওয়া হয়, তবে ছবি হয়ে ওঠে গল্প। অন্যভাবে বললে, নিউজফিডের অসংখ্য লেখা-ছবির মধ্যে আপনার সেলফি বন্ধুরা কেন দেখবে, সেটুকু মাথায় রাখুন।
নিজেকে জানুন
সেলফিকে যদি শিল্পে পরিণত করতে চান, তবে খুঁজে বের করতে হবে আপনার সেরা ভঙ্গি—যেদিক থেকে আপনাকে দেখতে সবচেয়ে ভালো লাগে। প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যামেরার দিকে খানিকটা ঝুঁকে কিংবা বাঁকা করে মুখমণ্ডলের অবস্থান ঠিক করে নিন। ক্যামেরার মাথার খানিক ওপরে রাখতে হবে, তবে থাকবে আপনার মুখের দিকে খানিকটা বাঁকানো। এতে নাক ও চোখ ভালো দেখাবে।
‘ডাকফেস’ না করাই ভালো
ডাকফেস নামের অদ্ভুত যে পোজ হালের আবিষ্কার, তা এড়িয়ে যাওয়ায় ভালো। এতে বড়জোর ঠোঁটে একটা ‘ডাক’ বা হাঁসের মতো ভাব আসতে পারে, আর কিছু না।
সেলফিতে থাক প্রাকৃতিক আলো

যুগে যুগে, কালে কালে সেরা যত সেলফি তোলা হয়েছে, তার রহস্য হলো প্রাকৃতিক আলো। উজ্জ্বল আলোতে মুখের ত্বক বেশ মসৃণ দেখায়, প্রাকৃতিক ফিল্টারের কাজ করে। এতে নো ফিল্টার হ্যাশট্যাগ দিয়ে ছবি পোস্ট করলে মিথ্যা বলা হবে না!

অবিবেচক হওয়া যাবে না

এ নিয়ে কিছু বলার কি প্রয়োজন আছে? কোন অবস্থান এবং কোন পারিপার্শ্বিক পরিবেশে সেলফি তোলা যাবে না বা উচিত নয়, তা মানুষের সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানের মধ্যেই পড়ে। তবু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হোক কিংবা সংবাদমাধ্যমে, মাঝেমধ্যে অবিবেচকের মতো তোলা সেলফি আমাদের দেখতে হয়। শোক, দুর্যোগ, কিংবা মানুষের বিপদের কোনো মুহূর্তে সেলফি তোলা উচিত নয়। চলন্ত গাড়ির চালকের কখনো সেলফি তোলা উচিত নয়, এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সেলফি যদি তুলতেই হয় তবে গাড়ি থামিয়ে তুলুন। আর সে ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার সময় তা লিখে দিন।

চমৎকার পটভূমি

হয়তো চমৎকার কোনো ওয়ালপেপার, কিংবা সুন্দর কোনো গাছ, চমৎকারভাবে ছাঁটা ঘাসের সবুজ মাঠও হতে পারে, আবার বইয়ের তাক পেছনে রেখেও সেলফি হতে পারে। দিন শেষে আলোকচিত্র একধরনের শিল্প। আশপাশের পরিবেশ বুঝে সেলফিতে নিজের ভেতরের শিল্পীমনের প্রতিফলন রাখুন।

খুব চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই

সেলফি নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করে মাথার চুল ফেলে দেওয়ার কিছু নেই। সেরা সেলফি মানে নিখুঁত ছবি হতে হবে, তা কিন্তু নয়। কখনো মেকআপ ছাড়া সেলফি তুলতে পারেন, বোকা বোকা চেহারা হলেও ক্ষতি কি? নতুন কিছু করার চেষ্টা করে দেখুন। মজা করুন। আপনার বিভিন্ন মুখভঙ্গি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন। নিজের ভেতরের রসবোধ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন।

মাথায় রাখতে পারেন কিছু বিষয়

*আপনার কাছে যা ভালো লাগছে, অন্যদের কাছে তা না-ও লাগতে পারে। দ্বিতীয় কারও মতামত নিতে পারেন।

*পরিচ্ছন্নতার দিকটা গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।

*সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন সেলফি দেওয়া অন্যদের বিরক্তির কারণ হতে পারে।

*মাঝেমধ্যে ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা যেন অত্যধিক না হয়।

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s