
ছবি উঠানোর জন্য লেন্সের ঢাকনা খোলা হলে তারপর থেকে ক্যামেরার সেন্সরে আলো ঢুকতে থাকে। এইসময় ছবি তুলতে গিয়ে যদি হাত কাঁপে তাহলে সামনের দৃশ্য একই জায়গায় থাকার বদলে কিছুটা ছড়িয়ে যায়। আর তার ফলে ছবি হয় ঝাপসা। সাটার স্পিড যত কম হবে ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। তেমনি যদি দূরের ছবি তুলতে গিয়ে সামান্য নড়াচড়া হয় তবে আলো বড় দূরত্ব অতিক্রম করে এবং সেই ছবিও ঝাপসা হতে পারে। এই সমস্যার সমাধান ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন। ক্যামেরার নড়াচড়া হিসেব করা এই প্রযুক্তির কাজ। ছবি তুলতে গিয়ে হাত কেঁপে গেলে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন সঙ্গে সঙ্গে বাইরে থেকে আলো নেয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে পরিবর্তিত জায়গার দৃশ্য ধরা পড়ে না, পাওয়া যায় স্পষ্ট ছবি।
ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন অনেক রকমের হয়। কোন কোন ক্যামেরার লেন্সে এই প্রযুক্তি যোগ করে দেয়া হয়, কোনটায় ক্যামেরার প্রসেসর এই কাজ করে, কোন ক্যামেরায় দুই ধরণের সুবিধাই থাকে। ভাগ দুটি হচ্ছে অপটিক্যাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন এবং ডিজিটাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন। অপটিক্যাল পদ্ধতিতে ছবির মান ভাল থাকে।
ভুল পরিস্থিতিতে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করলে মাঝারি স্থিতিশীলতাতেও কিছু অদ্ভুত প্রভাব পড়তে পারে। বেশিরভাগ পেশাদার ফটোগ্রাফাররা এ কারণেই খুব প্রয়োজন না হলে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন বন্ধ করে রাখে।যেমন ট্রাইপড ব্যবহার করার সময় যদি ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন থাকে, ক্যামেরা ধরে নেয় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করতে হবে। ফলে স্থির ছবিকে ষ্ট্যাবিলাইজ করার চেষ্টা করে। এতে ভালোর পরিবর্তে মন্দ ফল পাওয়া যায়। তবে কম্প্যাক্ট ক্যামেরার ক্ষেত্রে ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন-অফ করার কাজ করতে হয় মেনু থেকে। ক্যামেরা নির্মাতারা ষ্ট্যাবিলাইজেশন এর জন্য একেক নাম ব্যবহার করে। নাইকন (নিকন) বলে ভাইব্রেশন রিডাকশন (ভিআর), ক্যানন বলে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন (আইএস), ট্যামরন বলে ভাইব্রেশন কন্ট্রোল (ভিসি) ইত্যাদি।
ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করার সময় মনে রাখা জরুরি, ট্রাইপড ব্যবহারের সময় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করা যাবে না। ডিএসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে ক্যামেরা অফ করার আগে ষ্ট্যাবিলাইজেশন সুইচ অফ করে নিতে হবে। ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করে সাধারনত সাধারন সাটারস্পিডের দ্বিগুন সাটার স্পিড ব্যবহার করা যায় এবং অল্প আলোয় ছবি উঠানোর সময় একে কাজে লাগালে ছবি ভালো হবে।